ব্রেকিং
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রকাশ: ১৯:৪০, ১৯ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৪৩, ১৯ মে ২০২৫
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের কথা বললে সরকার অখুশি হয়। বর্তমান সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার কথাবার্তায় মনে হয় যতো দিন ইচ্ছা ততোদিন তারা ক্ষমতায় থাকবে। নির্বাচন যদি না হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাজ কি। আরো একজন মহিলা উপদেষ্টা বলেছেন ৫ আগস্ট যা হয়েছে তা নির্বাচনের চাইতেও বেশি। এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে নজর দেয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় সিলেট শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে বিএনপির সিলেট বিভাগের সদস্য ফরম সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথাগুলো বলেন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) আলহাজ্ব জিকে গউছের সভাপতিত্বে ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।
সালাহউদ্দিন আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে আর দাফন হয়েছে ভারতে। তারা ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। আজ পর্যন্ত তারা কোন অনুসূচনা বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। বিএনপির কি এতো আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানী করতে হবে?।
তিনি বলেন, যিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশী পরিচয় দিবেন তিনিই জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবেন। এই দেশের প্রতিটি ধুলি কনাকে বিএনপি ধারন করে, লালন করে। বাংলাদেশ অফিসিয়ালি ১৮ কোটি জনগন বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএ তে গণতন্ত্র নাই, তাদেরকে কেন আহবান করতে হবে? গত বছরের ৫ আগষ্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। উল্টো তারা গণঅভূত্থানে আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যয়িত করছে। তারা কি ভাবে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে?।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষনা দিয়েছিলেন। আমরা জানতাম নিষ্ঠুরভাবে ফ্যাসিবাদের পতন হবে। যারা দেশের জনগনকে হত্যা করেছে, পঙ্গু করেছে, গুম, অপহরণ করেছে তাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। বাংলাদেশে যেন কোন দিন আর স্বৈরশাসকের বা ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে দেশের একনায়কতন্ত্রীক সংবিধান বাকশালকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে সকল মানুষের ধর্মীয় চর্চার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। তিনি বেঁচে রয়েছেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। বিএনপি জনগনের দল। বিএনপি থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকবে। বিএনপি দুর্বল হলে বাংলাদেশ দুর্বল হবে। বিএনপির জন্ম না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হতো না, বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না । তাই বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ বিলম্ব হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সিলেট জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা নুরুল হকের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সূচিত সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে দায়িত্বে) তারিকুল আলম তেনজিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম. নাসের রহমান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, শেখ সুজাত মিয়া ও কয়সর এম আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আব্দুল হক, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আরাফুল কবির খোকন প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা ও মহানগর, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন সহ সিলেট বিভাগের সকলা উপজেলা, পৌর এবং সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, দুপুর ১২টায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দলীয় নেতাকর্মীরা স্বাগত জানান। পরে দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন।