ব্রেকিং
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রকাশ: ১২:৪৭, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৩০, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
ছবি-সংগৃহীত
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ’স্যার এই দিকে আসেন, আমার খুব ব্যাথা করছে’। এই ডাক দেয়াকে কেন্দ্র করে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর স্বজনকে তুচ্ছতাচ্ছিল ও লাথি মারার ঘটনায় চাঞ্চ্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
এই লাথি মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাধ্যমে বিরোপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আলোচিত ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি হচ্ছে ডা: তন্ময় দেবনাথ। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের পোস্ট গ্যাজুয়েশন করছেন। রোববার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে বিভিন্নজন নানান মন্তব্য করছেন। কিছু মিডিয়া এই চিকিৎসকের বক্তব্যে বরাত দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িকতার আবরণ দিয়ে তা ঢাকার চেষ্টা করছে।
কিন্তু ড: তন্ময় বলেছেন, ধর্মীয় বিষয় তুলে গালি দেয়া শব্দটি আমি নিজ কানে শুনিনি। তবে রোগীর আচরণে আমি অসন্তুষ্ট হয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে লাথি দেয়া ও পা তোলাটা কোনোভাবেই সঠিক হয়নি বলে আমি অনুভব করছি। আমি এখন ডিপ্রেশনে আছি। আমি যে ভাইরাল হলাম এজন্য হয়তো কোনো রোগী সহজে আমার কাছে আসবে না। কিন্তু আমি কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেছি সেখানের মানুষ আমাকে খুব পছন্দ করতো। ওসমানীর ঘটনায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং স্যারদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করেছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে এমবিবিএস পাশ করে ২০২২ সালে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে চিকিৎসক হিসেবে জীবন শুরু করেন তন্ময়।
এই ঘটনায় কলেজের সিনিয়র চিকিৎসককে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্তে কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তাকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়েছে এবং বুধবার তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হওয়ার জন্য ডা: তন্ময়কে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, চিকিৎসক তন্ময় দেবনাথ একজন স্নাতকোত্তর ‘ফেজ-বি’-এর আবাসিক শিক্ষার্থী। বাগ্বিতণ্ডার ঘটনার পর হাসপাতালের পরিচালক ঘটনাটি তদন্তের জন্য ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। একই সঙ্গে চিকিৎসক তন্ময় দেবনাথকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জ খলাগাঁওয়ের বাসিন্দা জুবায়ের আহমদ (২৫) কে নিয়ে তাঁর আত্মীয়স্বজন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। সাথে তার ফুফু আয়েশা বেগম ও বন্ধু জুবেল আহমদ ছিলেন। রোববার রাতে রোগীর প্রচন্ড পেটে ব্যাথা অনুভব করলে ডা: তন্ময়কে ’স্যার আমাদের রোগাটা দেখেন’ বলে ডাক দেন। এসময় তন্ময় পাশের ওয়ার্ডে জরুরী রোগী দেখতে যান। ফিরে এসে তিনি রোগী ও তার স্বজনদের রুমে ডেকে পাঠান এবং বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
রোগীর ফুফু বলেন, আমরা খুব অসহায় হয়ে আমার ভাইপো কে নিয়ে চিকিৎসার জন্য যাই। ডাক্তার আমাদেরকে তুচ্ছতাচ্ছিল করে বলেন, তুমি কী জমিদারের বাচ্চা, আমাকে এভাবে ডাক ছিলে? আমরা রোগীর প্রচন্ড ব্যাথার কথা জানালেও তিনি আমাদের দিকে তেড়ে আসেন এবং লাথি মারেন। আমরা এই দুর্ব্যবহারে খুব কষ্ট পেয়েছি। আমরা ’স্যার’ বলে ডেকে কি অন্যায় করেছি। ওয়ার্ডের সবাই বলেছে এটা ডাক্তারের ঠিক হয়নি। চিকিৎসা না পেয়ে এবং কিছু সাংবাদিক ভিডিও ও নানা প্রশ্ন করায় আমরা ভয় পেয়ে যাই। তাই রাতের আধারে কাউকে কিছু না বলে ওসমানী থেকে বাড়িতে চলে আসি।