ব্রেকিং
বিশেষ সংবাদদাতা:
প্রকাশ: ১২:৫৪, ১৭ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৬:২৩, ১৭ মে ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের পুত্রবধু, সিলেটের সুনামধন্য বনেদি পরিবারের সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মীনি ও খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমানকে ঘিরে সিলেট-১ আসনের রাজনীতিতে চলছে নানামুখী আলোচনা।
ডা. জুবাইদা তাঁর শাশুড়ি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গত ৬ মে দেশে ফিরছেন।
১৭ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরায় তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সিলেটে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের আনন্দ মিছিলের পর এবার নগরজুড়ে পোস্টারিং হয়েছে। এতে তাঁকে ‘মর্যাদাপূর্ণ’ সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাওয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা এই পোস্টার নগরজুরে সাঁটিয়েছেন তা উল্লেখ না থাকায় কিছুটা ধূম্যজালের সৃষ্টি হয়েছে।
দেশে ফেরার সময় স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেছেন সিলেটের মেধাবী মেয়ে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হলে সেটা হবে দলের জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ।
ডা. জুবাইদার দেশে ফেরা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে পটপরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। জুবাইদার জন্মভূমি সিলেটে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা, নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রাজনীতিতে অভিষেক হওয়ার বিষয়টি নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় ওঠেছে।
এদিকে জুবাইদা রহমানকে নিয়ে সিলেটে যখন আলোচনা তুঙ্গে, তখন যুক্তরাজ্য ভ্রমণ শেষে ১৮ দিন পর দেশে ফিরে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীও একই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
শুক্রবার এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমিতো মিডিয়ার সামনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সিলেট-১ (নগর-সদর) আসনে প্রার্থী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। তারেক রহমান প্রার্থী না হলে জিয়া পরিবারের কেউ যেন প্রার্থী হন, সে দাবিও জানিয়েছি। এ নিয়ে রহস্যের কিছু নেই।
ডা. জুবাইদা রহমানের দেশে ফেরা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গর্বের। একজন সিলেটী হিসেবেও আমি আনন্দিত।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে আরিফুল হক সিলেট-১ আসনে জিয়া পরিবারের কাউকে প্রার্থী করার বিষয়ে বিভিন্ন সভায় বক্তব্য দেন। সেসব ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মূলত এর পরেই জুবাইদাকে নিয়ে সিলেটে আলোচনা শুরু হয়। এ থেকেই কেউ অনুপ্রাণিত হয়ে পোস্টার সাঁটিয়েছেন কি না, এটাও অনেকে ভাবছেন।
ডা: জুবাইদা রহমান নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলীর মেয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী জুবাইদা রহমানের চাচা।
শহরজুড়ে ‘জুবাইদার পোস্টার’
পোস্টারটি সিলেটের সন্তান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে নিয়ে। সিলেট-১ আসনে তাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। রঙিন পোস্টারের এক পাশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি। আরেক পাশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি। পোস্টারটির অর্ধেক অংশজুড়ে বড় করে ছবি রয়েছে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের।
সেখানে লেখা রয়েছে-- ‘বাংলাদেশের অহংকার, সিলেটবাসীর গর্ব- ডা. জুবাইদা রহমানকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের সংসদীয় আসন সিলেট-১-এর সাংসদ হিসেবে, আমরা অবহেলিত বঞ্চিত সিলেটবাসী আমাদের অভিভাবক হিসেবে দেখতে চাই।’
তবে কারা তাকে এই আসনে তাকে দেখতে চান তা পোস্টারে উল্লেখ নেই। পোস্টারটি যতটা নগরীতে সাঁটানো হয়েছে, তার চেয়ে বেশি দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
কেউ কেউ ধারণা করছেন, পোস্টার সাঁটানোর নেপথ্যে আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠজনেরা সম্পৃক্ত আছেন। কারণ, কিছুদিন আগে আরিফুল হক সিলেট-১ আসনে জিয়া পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে যুক্তরাজ্যের একাধিক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।
তবে এই পোস্টারিংয়ে দোষের কিছু দেখছেন না সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, দলের কেউ যদি পছন্দ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহধর্মিণী ও সিলেটের কৃতী সন্তান জুবাইদা রহমানের পোস্টার লাগান, সেটা তো দোষের কিছু নয়। এই গণতান্ত্রিক অধিকারে অন্যদের তো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি লন্ডনে ছিলাম। বৃহস্পতিবার সিলেটে এসেছি। কিন্তু এখন দেখছি, ফেসবুকে কেউ কেউ মিথ্যাচার করে বলছেন, এসব পোস্টার আমার লোকজন লাগিয়েছে- এটা একটা প্রোপাগান্ডা। আমি পোস্টার লাগালে তো নিজের নাম উল্লেখ করে “সৌজন্যে : আরিফুল হক চৌধুরী” লিখেই লাগাব।