ব্রেকিং
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রকাশ: ১৫:৫৯, ১০ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪৩, ১০ জুলাই ২০২৫
পাসের পর আনন্দে মশগুল সিলেটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: এইচ এম শহীদুল ইসলাম
* জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ জন
* গণিত ও ইংরেজিতে দূর্বল শিক্ষার্থীরা: সিলেট শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান
সিলেট বোর্ডের চলতি ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় ৬৮.৫৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ জন। গত বছরের তুলনায় পাশে হার ও জিপিএ- ৫ দুটোই কমেছে।
গত বছর সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৪৭১ জন শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ২টায় সিলেট শিক্ষা বোর্ড কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল প্রকাশ করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
তিনি জানান, এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ১৩১ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ২ হাজার ২১৯ জন। পাস করেছে ৭০ হাজার ৯১ জন শিক্ষার্থী।
পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণিত ও ইংরেজিতে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে, মানবিকে সবচেয়ে খারাপ ফল।
এবারের পরীক্ষায় ছেলেদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৪২ হাজার ৪৭ জন। পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪১ হাজার ৮০৪ জন এবং পাস করে ২৮ হাজার ৬৮৪ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক ৬২ শতাংশ।
মেয়েদের রেজিস্ট্রেশন ছিল ৬০ হাজার ৯৬৬ জন। পরীক্ষায় অংশ নেয় ৬০ হাজার ৪১৫ জন, পাস করে ৪১ হাজার ৪০৭ জন। মেয়েদের পাসের হার ৬৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছেলেরা ১ হাজার ৭৯১ জন এবং মেয়েরা ১ হাজার ৮২৩ জন।
বিজ্ঞান বিভাগে রেজিস্ট্রেশন করেছিল ২৩ হাজার ৮৮২ জন, পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৩ হাজার ৮০৫ জন, পাস করেছে ১৮ হাজার ৪৪২ জন। পাসের হার ৭৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলেরা রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৯ হাজার ৬৬৬ জন, অংশ নেয় ৯ হাজার ৬৪১ জন এবং পাস করে ৭ হাজার ৯০২ জন। ছেলেদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
মেয়েরা রেজিস্ট্রেশন করেছিল ১৪ হাজার ২১৬ জন, অংশ নেয় ১৪ হাজার ১৬৪ জন, পাস করেছে ১০ হাজার ৫৪০ জন। মেয়েদের পাসের হার ৭৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
মানবিক বিভাগে রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৭১ হাজার ৪৩৮ জন, পরীক্ষায় অংশ নেয় ৭০ হাজার ৯৭৪ জন, পাস করে ৪৫ হাজার ৯২৪ জন। পাসের হার ৬৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। ছেলেদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ছিল ২৮ হাজার ৬৬১ জন, পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৮ হাজার ৪৬৪ জন এবং পাস করে ১৭ হাজার ৯৬৩ জন। ছেলেদের পাসের হার ৬৩ দশমিক ১১ শতাংশ। মেয়েরা রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৪২ হাজার ৯৭৭ জন, অংশ নেয় ৪২ হাজার ৫১০ জন এবং পাস করে ২৭ হাজার ৯৬১ জন। পাসের হার ৬৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৭ হাজার ৪৯৩ জন, অংশ নেয় ৭ হাজার ৪৪০ জন, পাস করেছে ৫ হাজার ৭২৫ জন। পাসের হার ৭৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ছেলেদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ছিল ৩ হাজার ৭২০ জন, পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩ হাজার ৬৯৯ জন এবং পাস করে ২ হাজার ৮১৯ জন। পাসের হার ৭৬ দশমিক ২১ শতাংশ। মেয়েরা রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৩ হাজার ৭৭৩ জন, অংশ নেয় ৩ হাজার ৭৪১ জন, পাস করেছে ২ হাজার ৯০৬ জন। মেয়েদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৪১১ জন। এর মধ্যে ছেলেরা ১ হাজার ৭৪১ জন এবং মেয়েরা ১ হাজার ৬৭০ জন।
মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৯ জন। এর মধ্যে ছেলেরা ২২ জন এবং মেয়েরা ৮৭ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৪ জন, এর মধ্যে ছেলেরা ২৮ জন এবং মেয়েরা ৬৬ জন।
মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, ‘গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে না পারায় পাসের হার কমেছে। বিশেষ করে মানবিক বিভাগে ফেল করা শিক্ষার্থীর হার বেশি। দুর্গম হাওরাঞ্চল ও গ্রামের অনেক প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন গণিত ও ইংরেজি শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিদেশমুখী প্রবণতা, অমনযোগিতা, এবং শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবও খারাপ ফলাফলের অন্যতম কারণ।’
তিনি আরও জানান, ‘সব দিক বিবেচনায় সার্বিক ফলাফলে আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট। যেসব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’