ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

২৯ বৈশাখ ১৪৩২, ১৫ জ্বিলকদ ১৪৪৬

জারুল ফুলের মায়াজালে আচ্ছন্ন শাবিপ্রবি 

মাঈন উদ্দিন (শাবিপ্রবি) সংবাদদাতা:

প্রকাশ: ১৫:০৪, ১২ মে ২০২৫

জারুল ফুলের মায়াজালে আচ্ছন্ন শাবিপ্রবি 

প্রকৃতি যখন তার রূপে শিখর স্পর্শ করে, তখন সে সৃষ্টি করে এক নিঃশব্দ মোহ। এমনই এক মোহময় দৃশ্য এখন ছড়িয়ে পড়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসজুড়ে। জারুল ফুলের নীল-বেগুনি রঙের মায়াজাল যেন ছায়া ফেলে দিয়েছে প্রতিটি পথে, গাছে, আঙিনায়।

প্রতি বছর এপ্রিলের শেষভাগ থেকে মে মাসের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে জারুলের এই রূপবিস্তার দেখা যায়। প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই লেকের দু’পাশে সারি সারি জারুল গাছ। ডালে ডালে ঝুলে থাকা ফুলগুলো যেন নিঃশব্দে বলে চলে বসন্ত ও গ্রীষ্মের সন্ধিক্ষণের এক শান্ত কবিতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এককিলো রোড, ভিসি বাংলো, অতিথি ভবন, ইউনিভার্সিটি সেন্টার, ছাত্রী হলসংলগ্ন রাস্তা কিংবা শাহপরান হলের সামনের খোলা প্রান্তর—সবখানেই জারুল ফুলে ছেয়ে গেছে। দুপুরের রোদে এ ফুলগুলো যেন আরও দীপ্ত, আরও মোহনীয়।

শিক্ষার্থীদের মতে, “জারুল ফুল ফুটলে মনটা হালকা লাগে। সেমিস্টারের চাপে ক্লান্ত মন যেন একটু প্রশান্তি পায়।” শিক্ষক শিক্ষিকারাও ক্যাম্পাসের এই শৈল্পিক রূপ উপভোগ করেন নীরবে।

কারো হাতে ক্যামেরা, কেউ ব্যস্ত গল্পে; আবার কেউ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে ঝরে পড়া পাপড়ির দিকে তাকিয়ে। সেই মুহূর্তগুলোতে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস যেন হয়ে ওঠে এক জীবন্ত কবিতা, যেখানে প্রতিটি পঙক্তি লেখা হয় প্রকৃতির রঙে।

প্রথম বর্ষে দেখা প্রথম জারুল আর শেষ বর্ষে চোখের সামনে তার ঝরে যাওয়া—সব মিলিয়ে জারুল যেন এক সময়ের সাক্ষী, অনুভবের বাহক।

জারুল ফুলের সৌন্দর্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুহান আহমদ বলেন, তপ্ত গ্রীষ্মের দুপুরে যখন প্রকৃতি তার কোমলতা হারিয়ে ফেলে, তখনই জারুলের নিঃশব্দ প্রস্ফুটনে ক্যাম্পাসে শুরু হয় এক অপরূপ সৌন্দর্যের উৎসব। পাপড়ির ছায়ায় রাঙিয়ে ওঠে প্রতিটি পথ, প্রতিটি প্রাঙ্গণ। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এক অদৃশ্য প্রশান্তি। যা শিক্ষার্থীদের ক্লান্তি দূরীভূত করে ক্লাসে মনযোগী করে তুলে।

আরেক শিক্ষার্থী জহির আহমেদ বলেন,জারুল কেবল দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর রয়েছে ঔষধিগুণও। গাছটির বীজ, ছাল ও পাতা ব্যবহৃত হয় ডায়াবেটিস, জ্বর, কাশি ও অজীর্ণতা প্রতিরোধে। ফলে এই ফুল শাবিপ্রবির পরিবেশ ও জীবনের সঙ্গে গড়ে তুলেছে এক অন্তরঙ্গ সংযোগ।

জারুল ফুল তাই কেবল প্রকৃতির সাজ নয়, এটি শাবিপ্রবির সৌন্দর্য, আবেগ আর স্মৃতির প্রতীক। প্রতি বছর ফিরে আসে, নতুন করে ছুঁয়ে যায় ছাত্রছাত্রীদের হৃদয়, আর রেখে যায় রঙিন কিছু অনুভব—যা বহন করে ভবিষ্যতের পথে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন