ঢাকা, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৯ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

পশুর হাট জমবে শেষ মুহুর্তে

সিলেটে ভারতীয় চোরাচালানের গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

স্টাফ রিপোর্টার:

প্রকাশ: ১৮:১৫, ৪ জুন ২০২৫

সিলেটে ভারতীয় চোরাচালানের গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

পবিত্র ঈদুল আজহা তিনদিন আগেও বুধবার পর্যন্ত সিলেটে জমে উঠেনি পশুর হাট। গত ২৩ মে হাট চালু করার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু হাটগুলো অন্যান্য বছরের তুলনায় তেমন পশু আমদানি হয়নি।

তবে শেষ মুহুর্তে এসে জমে উঠে পশুর বাজার। প্রবাসী অধ্যুষিত এই নগরীতে শেষ মুহুর্তে পশু কেনায় ব্যস্ত হন নগরবাসী। চলে ঈদের জামাতের আগ পর্যন্ত। গরু-ছাগল কিনে বাসাবাড়িতে দু’একদিন রাখা, খাবার দেয়া, চুরির আশংকা ইত্যাদির জামেলায় আগের রাতেই অধিকাংশ কোরবানি দাতা গরু সংগ্রহ করেন।

নগরীর প্রধান ও একমাত্র বড় স্থায়ী পশুর হাট কাজিরবাজার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশাল আকারের এবং ছোট ও মধ্যম মানের গরু নিয়ে বসে আছেন পাইকাররা। সাথে ছাগল-ভেড়ারও সমাগম রয়েছে বাজারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্রেতা কম। অনেকেই বাজারে যাচ্ছেন প্রাথমিকভাবে গরুর দামদর করছেন। বেচাকেনা তেমন নেই। তবে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা জমার আশায় বসে আছেন পাইকাররা।

তবে জমজমাট হওয়ার আশায় বসে থাকা গরুর বাজারের বিক্রেতাদের মাঝে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সীমান্তপথে চোরাইভাবে ভারত থেকে আসা গরু। সিলেট সীমান্তের অন্তত ২০টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিনই ভারতীয় গরু চোরাচালান হয়ে আসছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, আমরা সারাবছর গরু-ছাগল লালন পালন করি, কিন্তু ঈদের সময় ভারতীয় গরু ঢুকে পড়ায় বাজারে আমাদের গরুর চাহিদা ও দাম দুই-ই কমে যায়। এতে লোকসানে পড়ার শংকায় উদ্বিগ্ন থাকি আমরা।

কাজিরবাজার পশুর হাটের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন লোলন বলেন, হাটে ইতোমধ্যে পশু আসা শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন পশু যোগ হচ্ছে। এবার দামও কম। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো। শেষ সময়ে বিশেষ করে বৃহস্পতি ও শুক্রবার থেকে হাট পুরোদমে জমে উঠবে বলে আশা করছি।

এদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আরো ৭টি অস্থায়ী হাটের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এসব অস্থায়ী হাটেও পশু আসতে শুরু হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলা প্রশাসন অনুমোদিত আরো ১০টি হাটও কেনাবেচার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সেসব হাটেও আসতে শুরু করেছে পশু।

সিসিক সূত্র জানায়, সিলেট জেলা প্রশাসন অনুমোদিত ৭টি হাটগুলো হচ্ছে- দক্ষিণ সুরমা প্যারাইরচক ট্রাক টার্মিনাল, মিরাপাড়া আব্দুল লতিফ স্কুল সংলগ্ন মাঠ, টিলাগড় পয়েন্ট, মেজরটিলা বাজার, নতুন টুকেরবাজার, মাছিমপুর কয়েদীর মাঠ ও শাহপরান গেইট এলাকা।

কাজিরবাজারের গরু বিক্রেতা খয়ের উদ্দিন বলেন, এই হাটে স্থানীয় প্রায় ৫০ জন এবং বাইরে দেড় শতাধিক পাইকার গরু নিয়ে এসেছেন। এবার গরুর দাম তুলনামুলক কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, অথচ  পশু খাদ্যের দাম ও পরিচর্যা মূল্য তুলনামূলক বেড়েছে।

বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, নেত্রকোনা থেকে সিলেটে গরু নিয়ে আসেন ২ দিন আগে। কিন্তু এখনো বিক্রি নেই বললেও চলে। ক্রেতা নাই দেখে লোকজন দামও কম হাঁকাচ্ছেন।

নগরীর টিলাগড়স্থ অস্থায়ী পশুর হাটের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মোহাম্মদ লিলু মিয়া বলেন, আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি। ইতোমধ্যে পশুও আসা শুরু হয়েছে। নগর এলাকায় শেষ ১/২ দিনই ব্যবসা হয়। এবারও শেষ দিকে বাজার জমে উঠবে বলে মনে আশা করছি।

এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট সদর উপজেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে ২০টি হাটের তালিকা পেয়েছি। এসব হাটের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় সাদা পোষাকের গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন