ঢাকা, রোববার, ০৪ মে ২০২৫

২১ বৈশাখ ১৪৩২, ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৬

নিউইয়র্কে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মুশফিক

’ফ্যাসিবাদের দোসরদের ছাড় দেয়া হবে না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

প্রকাশ: ১৭:৫৮, ৫ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৮:০০, ৫ এপ্রিল ২০২৫

’ফ্যাসিবাদের দোসরদের ছাড় দেয়া হবে না’

‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের অনেক কর্মকর্তা চাকরি বাঁচাতে প্রবাসে বসবাসকারী সাংবাদিক, বিরোধী নেতাকর্মী ও অ্যাক্টিভিস্টদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে এটি যেমন সত্য, তেমনি কিছু কিছু কর্মকর্তা নিজেরা স্বেচ্ছায় স্বৈরাচার তোষণের অংশ হিসেবে পেশাগত ভূমিকার বাইরে গিয়ে ‘রেডলাইন’ অতিক্রম করেছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে, স্বৈরাচারের দোসরদের কিছুতেই ছাড় দেয়া হবে না’ -বলে মন্তব্য করেছেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।  

নিউইয়র্কে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মিলনায়তনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপরোক্ত মন্তব্য করেন বর্তমানে ঈদের ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্র সফররত মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। 

তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ডিসি ও নিউইয়র্কে সাংবাদিক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে কনস্যুলেট ও দূতাবাসের তৎকালীন কর্মকর্তাদের নিকট থেকে বিভিন্নভাবে নিজের সাংবাদিকতার কাজে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনাবলী উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, ‘এমনকি আমার ফরেন প্রেস সেন্টারের ক্রিডেন্সিয়াল বাতিল করার জন্য দূতাবাসের কর্মকর্তারা স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট অফিসে লাগাতার তদবির করেছিলেন।’

সাম্প্রতিক ট্রাম্প ট্যারিফের বিষয়ে তিনি সমবেত বাংলাদেশিদের বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের একটি ডেলিগেশন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার জন্য শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। তিনি বলেন, আমি ওয়াশিংটন দূতাবাসকে জানিয়েছি যে এ বিষয়ে যদি আমার কোনো সহযোগীতা লাগে, তবে যে কোনো সময় যে যেকোনো জায়গায় ভূমিকা রাখতে আমি সবসময় প্রস্তুত।  উপস্থিত বাংলাদেশি আমেরিকানদের নিজ নিজ কংগ্রেস মেম্বার, সিনেটরদের সঙ্গে এ নিয়ে জোরালোভাবে কাজ করারও আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মুশফিক। 

মতবিনিময় সভায় বিগত ১৫ বছর যাবৎ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্নভাবে অংশ নেয়া বাংলাদেশি আমেরিকান সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষাবিদ সহ রাষ্ট্রদূত মুশফিকের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করেছেন নিউইয়র্কের এমন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

প্রায় ৩ ঘণ্টার এই আয়োজনে উপস্থিত প্রত্যেকেই বিগত স্বৈরাচার শাসনামলে কীভাবে দেশে এবং প্রবাসে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমনকি বাংলাদেশ কনস্যুলেটে তাদের ন্যায্য নাগরিক সেবা গ্রহণ করতে এসেও তৎকালীন কর্মকর্তাদের হাতে কিভাবে নাজেহাল হয়েছেন- তার স্মৃতিচারণ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল নাজমুল হাসান, হেড অফ চ্যান্সারি  ও কাউন্সেলর ইশরাত জাহান ছাড়াও কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

সমাপনী বক্তব্যে কনসাল জেনারেল বলেন, কনস্যুলেটের সেবা প্রদান সম্পর্কে আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি যে, আমি আমার সহকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে রেখেছি, বিভিন্ন কারণে প্রবাসীরা বিরক্ত থাকতে পারেন, তারা অনেক সময় অযাচিত কথাবার্তা বলতে পারেন, কিন্তু যে পর্যন্ত কেউ আপনাদের গায়ে হাত না তুলবে, সে পর্যন্ত প্রত্যেক প্রবাসীকে আমরা হাসিমুখে সার্ভিস দিতে বাধ্য। 

আরও পড়ুন