ব্রেকিং
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রকাশ: ২১:১৪, ৩০ জুলাই ২০২৫
শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে দাসত্বের চুক্তি করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর আমরা আমাদের নাগরিকত্ব সপে দিয়েছিলাম একটি ফ্যাসিবাদি সরকারের কাছে। যারা পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে দাসত্বের চুক্তি করেছিল। আমরা কখনো ভাবিনি এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে। জুলাই ২৪ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে পুনর্জন্ম লাভ করেছি।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, গুম, খুন, আয়নাঘর, বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে চলছিল এই বাংলাদেশ। এর থেকে পরিত্রাণ তোমরাই দিয়েছো। ছাত্র-জনতার এই অর্জনকে ম্লান হতে দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট রেজিম যে দাসত্বের সংস্কৃতি চালু করেছিল, আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমাদের মাঝে বিভাজন তৈরি না করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত থাকতে হবে।
পাবলিক বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দলীয় লেজুড় ভিত্তি থেকে বের হয়ে আসার আহবান জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আবরার বলেন, বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংস করেছে। এই সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। মেধা বিবেচনায় নিয়োগ দিতে হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দলীয় লেজুড় ভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নতুন বাংলাদেশে তোমরা নিজেদেরকে আপন স্বকীয়তায় উপস্থাপন করবে, রাজনৈতিক দলগুলো কিভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে, তা তোমরা নির্ধারণ করবে। তোমাদের ধৈর্যশীল ও রুচিশীলতার পাশাপাশি উন্নত মনের বিবেকবান ও সুন্দর মনের মানুষের পরিচয় দিতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, অংশীদারদের সাথে বসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ করতে হবে। পেশীশক্তির ব্যবহার রোধ করতে হবে। সহনশীলতা সহমর্মিতার সংস্কৃতি চালু করতে হবে। তিনি বলেন, নবীন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমে নিজেদের সম্পৃক্ত করে নিজেদের মেলে ধরবে । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল নলেজ বাড়ানোর জন্য বিশ্ব আঙ্গিকে লাইব্রেরিকে উপযুক্ত করতে হবে যা গবেষণার কাজকে আরো ত্বরান্বিত করবে।
সিকৃবি’র ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ.টি.এম. মাহবুব-ই-ইলাহী।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহবায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কাওছার হোসেন, প্রক্টর প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিন আহাম্মদ ও রেজিস্ট্রার (অ.দা) প্রফেসর ড. মোঃ আসাদ-উদ-দৌলা প্রমুখ।
ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম বলেন, সিকৃবি শিক্ষা, গবেষণা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অগ্রগতি সাধন করছে। সিকৃবিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, তোমরাও এই যাত্রায় আমাদের সহযাত্রী হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সীমিত সম্পদেও সীমাহীন সম্ভাবনা সৃষ্টি করা যায়, যদি থাকে দৃঢ় মনোবল ও নিষ্ঠা।